পোস্টগুলি

ঝটিকা সফরে বগুড়া

ছবি
অফিসের কাজে একদিনের জন্য বগুড়া যাওয়ার প্রোগ্রাম। সাথে ডাচ এডভাইজার ও একজন কলিগ। আমি যাওয়াটা এভয়েড করতে পারতাম, কিন্তু মহাস্থান গড় দেখার লোভে লোভে আমিও অংশ নিলাম। প্রোগ্রাম ঠিক হল সকালে রওনা দিয়ে বগুড়ায় অফিসের কাজ শেষ করে মহাস্থান ঘুরে সেদিনই ফিরব। সকাল আটটা বিশে এডভাইজার আরির সাথে শেরাটন থেকে যাত্রা শুরু। শুক্রাবাদে রিটন যোগ দিল আমাদের সাথে। আরি বলেছিল বাংলা গানের সিডি সংগে নিতে। কোনো কিছু শেখার বিষয়ে ইউরওপিয়ানদের আগ্রহ অতুলনীয়। বই পড়ে পড়ে আরি এখন বাংলা পড়তে পারে। খানিকটা লিখতেও পারে। হুমায়ুন আহমেদের সায়েন্স ফিকশন পড়ে ভক্ত হয়ে গেছে। জাফর ইকবালের সাথে কথা বলেছে তার সাইন্সফিকশন ডাচ ভাষায় অনুবাদ করে হল্যান্ডে প্রকাশ করবে। গাড়ি ঢাকার জ্যাম ছাড়িয়ে মিরপুর বাধের উপর দিয়ে চলছে। প্লেয়ারে গান চলছে হায়দার হোসেইনের। ফাইস্যা গেছি সহ বাকি গান গুলি আরির মনে ধরল খুব। গান শেষ হলে লেপটপে পুরা সিডি কপি করে রাখল। যমুনা সেতুর কাছাকাছি চলে এসেছি। সকালে উঠেছি ঘুম থেকে। ঘুম ঘুম ভাব আছে। আরি দেখলাম ঘুমিয়ে পড়েছে। চা খাওয়া দরকার। বিশেষ করে সিগারটের জন্য মন আকু পাকু করছে। সুন্দর একটা

বিরিশিরি ভ্রমন [শেষ] : কলমাকান্দা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে

ছবি
বিরিশিরিতে দুইদিন থাকলাম। পরেরদিন ফিরতে হবে ঢাকায়। আমি আরো দুই একদিন বেশি থাকতে পারতাম। কিন্তু ইকবাল, মুকুল ওরা বউ এর কাছে একদিনের ছুটি নিয়ে এসে দুই দিন পার করল। এর বেশি আর সাহস করলনা ওরা। রাতে মুন্নির উৎসাহের খিছুড়ি রান্না করল মাটির চুলায় লাকড়ি দিয়ে। মাটির চুলা দেখে রিমঝিমের আনন্দের শেষ নাই। পরদিনের প্রোগ্রাম হল সকালে ৩২ কি.মি দূরে কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তে মুক্তযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে ঘুরে এসে দুপুরে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়া। টেম্পু ভাড়া করে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু রিক্সা চালকদ্বয়ের প্ররোচনায় দূরত্বের কথা ভুলে গিয়ে ওদের সকালে আসতে বললাম। ওরা বলল এক ঘন্টায় পৌছে দিবে।

বিরিশিরি ভ্রমন ৬ : সাধু যোসেফের ধর্ম পল্লী ও ডাহুপাড়া বনে

ছবি
কুমুদিনী হাজং এর সাথে দেখা করার পর এবার আমাদের গন্তব্য রানীখং সাধু যোশেফের গীর্জা। ভারতীয় সীমান্তের কাছে পাহাড়ের চূড়ায় গীর্জা। স্থাপিত ১৯১২ খ্রীঃ। অবাক লাগে এত আগে এ প্রত্যন্ত অঞ্চলে খ্রষ্টান ধর্মপ্রচারকরা গীর্জা স্থাপন করতে চলে এসে ছিলেন।

বিরিশিরি ভ্রমন ৫ : কুমুদিনী হাজং এর সাথে সাক্ষাত

ছবি
দুই একজন কে জিজ্ঞাস করলাম কিন্তু বলল চিনেনা। তবে একজন মধ্য বয়স্ক বাঙালি চিনলেন। তিনি রিক্সা চালকদের বলে দিলেন কুমুদিনী হাজং এর বাড়ির কিভাবে পৌছান যাবে। ধন্যবাদ দিয়ে চললাম ওনার নির্দেশিত পথে। কুমুদিনী হাজং টংক আন্দোলনের নেত্রী। এটা ছিল ১৯৪৬-৫০ সাল এ এলাকার কৃষকদের পরিচালিত একটিআন্দোলন। টংক প্রথা হলো উৎপন্ন ফসল দ্বারা জমিদারদের খাজনা পরিশোধ করা। যেটা টাকায় খাজনা পরিশোধের চেয়ে বেশি ছিল। হাজং সম্প্রদায় এ ব্যাবস্থায় দিনে দিনে নিঃস্ব হয়ে পরে। এ সময় সুসং দুর্গাপুরের জমিদারদের ভাগ্নে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহ-এর নেতৃত্বে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে টংক প্রথা উচ্ছেদ, টংক জমির খাজনা স্বত্ব, জোত স্বত্ব, নিরিখ মতো টংক জমির খাজনা ধার্য, বকেয়া টংক মওকুফ, জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ ইত্যাদি দাবি নিয়ে টংক আন্দোলন শুরু হয়। হাজং সম্প্রদায় নিজেদের স্বার্থেই টংক আন্দোলনের সংগে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। সে সূত্রেই কুমুদিনী হাজং এর স্বামী লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর তিন ভাই টংক আন্দোলনের সংগে জড়িয়ে পড়েন। এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য জমিদার ও বৃটিশ পুলিশ দমন নিপীড়ন চালাতে থাকে। ১৯৪৬ সালের ৩১ জানুয়ার

বিরিশিরি ভ্রমন ৪ :চীনা মাটির পাহাড়ে

ছবি
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রিক্সা হাজির। নাস্তা গোসল করে রাওনা হতে হতে সকাল নয়টা। আমাদের প্রথম গন্তব্য বিজয়পুর চীনা মাটির পাহাড়। সোমেশ্বরী নদী পার হতে হবে। অবশ্য নদীর বেশিরভাগ অংশ সবাই হেটেই পার হয়।

বিরিশিরি ভ্রমন ৩

ছবি
নদী থেকে ফিরে বিরিশিরি বাজারে গিয়ে গারো মালিকানার হোটেলে চা নাস্তা খেয়ে আবার হাটতে হাটতে নদীর উপর ব্রিজে দাড়াই। নীচে সোমেশ্বরী আর আকাশে লক্ষ লক্ষ তারা। বিশাল আকাশ। শহরে এত বড় আকাশ দেখা যায় না। এই মায়াবী পরিবেশে ঘন্টা খানেক কাটিয়ে ফিরে চললাম একাডেমি গেষ্ট হাউসে। রাতে খাবারের বিষয়ে ইকবালের একটা প্রস্তাব ছিল যে এখানে চুলা আছে আমার হোটেলে না খেয়ে বরং নিজেরা রান্না করে খাই। বেড়াতে এসে মুন্নী রান্না করতে রাজী হবে না ভেবেছিলাম। কিন্ত দেখা গেল সে নিজে থেকেই সবাইকে রান্না করে খাওয়াতে উৎসাহী। সেদিন অনেক জার্নি হয়েছে তারপর রাত হয়ে গেছে সেজন্য রান্না না করে হোটেল থেকে খাবার আনার সিদ্ধান্ত হয়। হৃদয় হাজং কে নিয়ে সেই গারো হোটেলে রাতে খাবার ওসকালের নাস্টার অর্ডার দিই। হোটেল থেকে গেস্ট হাউসে খাবর পৌছে দেয় সময় মত। বিরিশিরি নিয়ে দুইটা কথা বলি। বিরিশিরি বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি গ্রাম। নেত্রকোনা থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ইংরেজ শাসন আমলে স্থাপিত শত বছরের পুরনো বয়েজ ও গালর্স হাই স্কুল, সরকারী উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী, সোমেশ্বরী নদী, সাগর দিঘী